অপরিচিতা
অপরিচিতা
লেখকঃরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।“ অপরিচিতা” গল্পে অপরিচিতা বিশেষনের আড়ালে একজন নারীর বলিষ্ঠ ব্যক্তিত্বের কাহিনি বর্ণিত হয়েছে। এই গ্লপে অনেকগুলো চরিত্র রয়েছে এর মধ্যে মূল চরিত্র গুলো হচ্ছে-
·
কল্যাণী
·
অনুপম
·
শম্ভুনাথ বাবু (কল্যাণীর বাবা)
·
অনুপমের মামা
·
অনুপমের মা
অনুপম বিশ শতকের দ্বিতীয় দশকের যুদ্ধসংলগ্ন সময়ের সেই বাঙালি যুবক, যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চতর উপাধি অর্জন করেও ব্যক্তিত্বহীন, পরিবারের কাছে অসহায় পুতুল মাত্র। তার বাবা এককালে গরীব থাকলেও ওকালতি করে প্রচুর পয়সা রোজগার করে ভোগ করার আগেই মারা যান। তার মা গরীব ঘরের মেয়ে ছিলো এজন্য তারা এখন যে বড়লোক এ নিয়ে তার মায়ের ছিলো খুব অহংকার।
অনুপমের বিয়ের জন্য পাত্রী খোঁজ চলে তার মামার এ বিষয়ে একটি মত ছিলো যে মেয়ের বাবা হবে গরীব কিন্তু টাকা দিতে কসুর করবে না। টাকার প্রতি লোভ তাদের প্রবল ছিলো।
এমতাবস্থায় অনুপমের বিয়ে ঠিক হয় শম্ভুনাথ বাবুর মেয়ের কল্যাণীর সাথে। বিয়ের দিন অনুপমের মামা মেয়েপক্ষকে যৌতুক নিয়ে চরম অপমান করে ও তাদের লোভী মানসিকতার পরিচয় দেয়। অন্যায় দেখেও অনুপম ভদ্র ছেলের মতো চুপ করে থাকে কোনো প্রতিবাদ করে না সে। ঠিক সেই মূহুর্তে বিয়ের লগ্ন যখন প্রস্তুত কন্যার লগ্নভ্রষ্ট হওয়ার লৌকিকতাকে অগ্রাহ্য করে শম্ভুনাথ সেন কন্যা সম্প্রদানে অসম্মতি জানায়।এই বলিষ্ঠ প্রত্যাখ্যান নতুন এক সময়ের আর্বিভাবের সংকেত। এরপর কল্যানী নিজেকে দেশের কাজে ব্রতী করে। দেশের কাজে নিজেকে সমর্পন করে কল্যাণীর বলিষ্ঠ ব্যক্তিত্বের জাগরণের মধ্য দিয়ে গল্পের শেষাংশে কল্যাণীর আত্মপ্রকাশ ভবিষ্যতের নতুন নারীর আগমনীর ইঙ্গিত বহন করে।
'অপরিচিতা' মনস্তাপে ভেঙেপড়া এক ব্যক্তিত্বহীন যুবকের স্বীকারোক্তির গল্প। গল্পটিতে পুরুষতন্ত্রের অমানবিকতার স্ফুরণ যেমন ঘটেছে, তেমনি পুরুষের ভাষ্যে নারীর প্রশস্তিও বর্নিত হয়েছে।
Comments
Post a Comment